রমজানে পরিবার হয়ে উঠুক জান্নাতি পরিবার
রমজানে পরিবার হয়ে উঠুক জান্নাতি পরিবার
মাহমুদ আহমদ লেখক: কলামিস্ট
আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। একজন মুমিনের পরিবারের জন্য এ মাস বসন্তের মাস। প্রতিটি মুমিন হৃদয় যেমন লাভ করে আল্লাহপাকের জান্নাতের প্রশান্তি তেমনি তার আধ্যাত্মিক বাগান এ মাসে নানান ধরণের ফুলে ফলে সুশোভিত হয়ে ওঠে। আমরা যদি আমাদের পরিবারগুলোকে জান্নাত সদৃশ বানাতে চাই তাহলে পবিত্র এ রমজান থেকে লাভবান হতে হবে। পরিবারের কর্তা বলে শুধু নিজে রোজা রাখলেই চলবে না বরং পুরো পরিবারকে সাথে নিয়ে রমজানের রোজা রাখতে হবে। সেই সাথে রমজান মাসের ইবাদতের একটি রুটিন এখনই প্রস্তুত করতে হবে। রুটিনটি এমন হতে পারে, পরিবারের সবাই মিলে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে আমাদের দিন শুরু হবে তারপর তাহাজ্জুদ নামাজ শেষ করে কমপক্ষে ত্রিশ মিনিট পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করবো তারপর পরিবারের সবাই একত্রে বসে সেহরি খেয়ে নেবল এরপর ফজর নামাজ আদায়ের জন্য সবাই একত্রে মসজিদে যাব। নামাজ শেষে কিছুক্ষণ আল্লাহর ধ্যানে যিকির করতে পারি, যেমন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার। এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও অন্যান্য যিকিরে নিজেকে মগ্ন রাখতে পারি। যারা অফিসে থাকবেন তারা অফিসে বসে কাজের ফাঁকে যিকিরে রত থাকুন। এতে আত্মা পরিষ্কার হবে এবং আল্লাহপাক পরিষ্কার আত্মাকে পছন্দ করেন। এরপর অফিস থেকে এসে সবাই ইফতারের জন্য একত্রে বসবো। ইফতারের পূর্বে কিছুক্ষণ দোয়া করতে পারি, ইফতারের পূর্বেকৃত দোয়া আল্লাহপাক কবুল করেন এমনটি হাদিস পাঠে জানা যায়। ইফতারের দোয়া পাঠ করে ইফতার শুরু করবো। ইফতার শেষে মসজিদে বা-জামাত নামাজের জন্য যাব। যদি কোন পরিবারের জন্য একান্তই মসজিদে যাওয়া কষ্টকর হয় তাহলে ঘরেই পরিবারের সবাই একত্রে নামাজ আদায় করতে পারি। এরপর মাগরিব থেকে তারাবি ও এশা পর্যন্ত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করবো। তারাবি ও এশা নামাজ আদায় করে কিছুক্ষণ দোয়া দরুদ পাঠে নিজেকে মগ্ন রাখবো। রাতে আগে ঘুমাতে যেতে হবে কারণ তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে হবে। তাহাজ্জুদ নামাজ আল্লাহকে লাভ করার এক বিশেষ সময়। আমি যেহেতু পরিবারের প্রধান তাই আমাকে আমার সন্তানদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে তারাও যেন এ রুটিন অনুযায়ী রমজান মাস অতিবাহিত করে। রমজানে শুধু নিজে আল্লাহপাকের আদেশ পালন করলাম আর অন্যরা পালন করলো না তা হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেন, ‘হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে আগুন থেকে বাঁচাও’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ৬)। তাই প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য সে যেন কেবল নিজেই মুত্তাকি না হয় বরং সে নিজে এবং পরিবারের সকলকে পুণ্যবান-মুত্তাকি করে গড়ে তোলে। সব ধরণের পাপ ও খারাপ থেকে বাঁচাবার জন্য তাদেরকে সঠিকভাবে শিক্ষা দেয়। আমরা যদি সন্তানদেরকে প্রকৃত ইসলামের শিক্ষায় লালিত-পালিত করি তাহলে পরিবার, সমাজ, জাতি, দেশ সর্বত্রই শান্তি বিরাজ করবে এটা নিশ্চিত। সন্তানদের যদি আমরা উত্তম শিক্ষা দিয়ে গড়ে তুলি তাহলে এদেশে থাকবে না কোন সন্ত্রাসী, থাকবে না কোন চোর-ডাকাত, হতে পারে না কোন মারামারি, কাটাকাটি। এক কথায় বলা যায় সকল প্রকার অরাজকতা থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। আর এ জন্য ঘরকেই বলা হয়েছে শিক্ষার সূতিকাগার। আমরা যদি আমাদের সন্তানদের প্রতি দৃষ্টি না দেই তাহলে খোদাতায়ালার কাছে আমরা অবশ্যই এর জন্য জিজ্ঞাসিত হব। আর রমজান মাস হচ্ছে প্রশিক্ষণের মাস। এ মাসে সন্তানদের যদি সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া যায় তাহলে সন্তানরা কখনই ভুল পথে পা রাখবে না। আমরা যদি আল্লাহপাকের আদেশ নিষেধ পরিপূর্ণভাবে প্রথমে নিজেরা পালন করে জীবন অতিবাহিত করি এবং সন্তানদের সেভাবে গড়ে তুলি তাহলে আমাদের ঘর জান্নাতি ঘরে পরিণত হতে পারে। নিজেদের পরিবারগুলোকে জান্নাতি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইলে পবিত্র রমজান মাসকে কাজে লাগাতে হবে। এ মাসের প্রতিটি সময়কে ইবাদতের রঙে রাঙাতে হবে। সাধারণত দেখা যায় যারা ধার্মিক তাদের সন্তানদেরকে তারা চান ধর্মের আলোয় আলোকিত করতে কিন্তু যারা ধার্মিক নন তাদের সন্তানরাই নানান পাপ কাজে লিপ্ত। আসুন না আগত এ রমজান মাস থেকে আমরা সবাই লাভবান হই আর আমাদের সন্তানদেরকে আগুনের আজাব থেকে রক্ষা করি, আমাদের ঘরগুলো জান্নাতে পরিণত করি।
মাহমুদ আহমদ লেখক: কলামিস্ট
আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। একজন মুমিনের পরিবারের জন্য এ মাস বসন্তের মাস। প্রতিটি মুমিন হৃদয় যেমন লাভ করে আল্লাহপাকের জান্নাতের প্রশান্তি তেমনি তার আধ্যাত্মিক বাগান এ মাসে নানান ধরণের ফুলে ফলে সুশোভিত হয়ে ওঠে। আমরা যদি আমাদের পরিবারগুলোকে জান্নাত সদৃশ বানাতে চাই তাহলে পবিত্র এ রমজান থেকে লাভবান হতে হবে। পরিবারের কর্তা বলে শুধু নিজে রোজা রাখলেই চলবে না বরং পুরো পরিবারকে সাথে নিয়ে রমজানের রোজা রাখতে হবে। সেই সাথে রমজান মাসের ইবাদতের একটি রুটিন এখনই প্রস্তুত করতে হবে। রুটিনটি এমন হতে পারে, পরিবারের সবাই মিলে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে আমাদের দিন শুরু হবে তারপর তাহাজ্জুদ নামাজ শেষ করে কমপক্ষে ত্রিশ মিনিট পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করবো তারপর পরিবারের সবাই একত্রে বসে সেহরি খেয়ে নেবল এরপর ফজর নামাজ আদায়ের জন্য সবাই একত্রে মসজিদে যাব। নামাজ শেষে কিছুক্ষণ আল্লাহর ধ্যানে যিকির করতে পারি, যেমন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার। এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও অন্যান্য যিকিরে নিজেকে মগ্ন রাখতে পারি। যারা অফিসে থাকবেন তারা অফিসে বসে কাজের ফাঁকে যিকিরে রত থাকুন। এতে আত্মা পরিষ্কার হবে এবং আল্লাহপাক পরিষ্কার আত্মাকে পছন্দ করেন। এরপর অফিস থেকে এসে সবাই ইফতারের জন্য একত্রে বসবো। ইফতারের পূর্বে কিছুক্ষণ দোয়া করতে পারি, ইফতারের পূর্বেকৃত দোয়া আল্লাহপাক কবুল করেন এমনটি হাদিস পাঠে জানা যায়। ইফতারের দোয়া পাঠ করে ইফতার শুরু করবো। ইফতার শেষে মসজিদে বা-জামাত নামাজের জন্য যাব। যদি কোন পরিবারের জন্য একান্তই মসজিদে যাওয়া কষ্টকর হয় তাহলে ঘরেই পরিবারের সবাই একত্রে নামাজ আদায় করতে পারি। এরপর মাগরিব থেকে তারাবি ও এশা পর্যন্ত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করবো। তারাবি ও এশা নামাজ আদায় করে কিছুক্ষণ দোয়া দরুদ পাঠে নিজেকে মগ্ন রাখবো। রাতে আগে ঘুমাতে যেতে হবে কারণ তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে হবে। তাহাজ্জুদ নামাজ আল্লাহকে লাভ করার এক বিশেষ সময়। আমি যেহেতু পরিবারের প্রধান তাই আমাকে আমার সন্তানদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে তারাও যেন এ রুটিন অনুযায়ী রমজান মাস অতিবাহিত করে। রমজানে শুধু নিজে আল্লাহপাকের আদেশ পালন করলাম আর অন্যরা পালন করলো না তা হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেন, ‘হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে আগুন থেকে বাঁচাও’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ৬)। তাই প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য সে যেন কেবল নিজেই মুত্তাকি না হয় বরং সে নিজে এবং পরিবারের সকলকে পুণ্যবান-মুত্তাকি করে গড়ে তোলে। সব ধরণের পাপ ও খারাপ থেকে বাঁচাবার জন্য তাদেরকে সঠিকভাবে শিক্ষা দেয়। আমরা যদি সন্তানদেরকে প্রকৃত ইসলামের শিক্ষায় লালিত-পালিত করি তাহলে পরিবার, সমাজ, জাতি, দেশ সর্বত্রই শান্তি বিরাজ করবে এটা নিশ্চিত। সন্তানদের যদি আমরা উত্তম শিক্ষা দিয়ে গড়ে তুলি তাহলে এদেশে থাকবে না কোন সন্ত্রাসী, থাকবে না কোন চোর-ডাকাত, হতে পারে না কোন মারামারি, কাটাকাটি। এক কথায় বলা যায় সকল প্রকার অরাজকতা থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। আর এ জন্য ঘরকেই বলা হয়েছে শিক্ষার সূতিকাগার। আমরা যদি আমাদের সন্তানদের প্রতি দৃষ্টি না দেই তাহলে খোদাতায়ালার কাছে আমরা অবশ্যই এর জন্য জিজ্ঞাসিত হব। আর রমজান মাস হচ্ছে প্রশিক্ষণের মাস। এ মাসে সন্তানদের যদি সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া যায় তাহলে সন্তানরা কখনই ভুল পথে পা রাখবে না। আমরা যদি আল্লাহপাকের আদেশ নিষেধ পরিপূর্ণভাবে প্রথমে নিজেরা পালন করে জীবন অতিবাহিত করি এবং সন্তানদের সেভাবে গড়ে তুলি তাহলে আমাদের ঘর জান্নাতি ঘরে পরিণত হতে পারে। নিজেদের পরিবারগুলোকে জান্নাতি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইলে পবিত্র রমজান মাসকে কাজে লাগাতে হবে। এ মাসের প্রতিটি সময়কে ইবাদতের রঙে রাঙাতে হবে। সাধারণত দেখা যায় যারা ধার্মিক তাদের সন্তানদেরকে তারা চান ধর্মের আলোয় আলোকিত করতে কিন্তু যারা ধার্মিক নন তাদের সন্তানরাই নানান পাপ কাজে লিপ্ত। আসুন না আগত এ রমজান মাস থেকে আমরা সবাই লাভবান হই আর আমাদের সন্তানদেরকে আগুনের আজাব থেকে রক্ষা করি, আমাদের ঘরগুলো জান্নাতে পরিণত করি।
0 comments:
Post a Comment